নওগাঁর বদলগাছীতে বিএনপি’র প্রতিবাদে পন্ড হলো উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভা
মোঃ ফরহাদ হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছীতে বিএনপি’র প্রতিবাদে পন্ড হলো উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভা। কোনঠাসা হয়ে উপজেলা চত্ত্বর ছেড়ে গেলেন আওয়ামী পন্থী চেয়ারম্যানরা।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে মাসিক আইনশৃঙ্খলাসহ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আইনশৃংখলা সভার পূর্বেই উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা চত্ত্বরে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং তারা আওয়ামীলীগ পন্থী চেয়ারম্যানদেরকে নিয়ে সভা না করতে জোর আপত্তি ও প্রতিবাদ জানান।
এসময় বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান আলী আওয়ামীলীগ পন্থি চেয়ারম্যানদের বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি নিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উপজেলা চত্ত্বরে তারা বিভিন্ন স্লোগান এবং প্রতিবাদ সভা করেন। প্রতিবাদ সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মো. রবিউল হাসান ও সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম (হালিম)। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের কোনও দোসর এই প্রশাসনে কোনও দিন কোনও কর্মকান্ড চালাতে পারবে না। তারা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালানোর পর বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সেদিন সচিবালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। তারা এখনও চক্রান্ত করছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা যদি রুখে দিতে না পারি তাহলে দ্বিতীয়বার যে স্বাধীন হয়েছে সেই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করতে পারবো না। তাই আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা ও দোসরদেরকে নিয়ে বর্তমান ইউএনও যে মিটিং করছে সেই মিটিং আমরা করতে দিবো না মর্মে হুশিয়ারী দিয়ে তারা উপজেলা চত্ত্বর ত্যাগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা ও সাধারণ জনতা বলেন, বিগত স্বেরাচার সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাসিক আইন শৃংখলা সভায় রাখা হতো। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে এই ইউএনও আইন শৃংখলা সভাসহ প্রতিটি সভায় আওয়ামী লীগ পন্থী লোকজন ছাড়া অন্য কোনও দলের নেতৃবৃন্দকে রাখেন না, যা দুঃখজনক। তারা আরও বলেন, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দকে মাসিক সভাগুলোতে রাখলে তার সমস্যা কোথায়। ইউএনও মাহবুব হাসানের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে তিনি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা ও নীল নকশা বাস্তবায়নে তৎপর।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগপন্থী একাধিক চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি জন্য তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান আলী বলেন, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানরাই থাকে। মিটিংয়ে বিএনপি, জামায়াত ও সুশীল সমাজের কাউকে রাখা হয় না জন্য সাধারণ লোকজনসহ বিএনপি’র কিছু লোক উপস্থিত হয়ে বলে এভাবে মিটিং হতে পারে না। এটাকে কেন্দ্র করে বাহিরে একটু হট্টগোল হয়েছিল। পরে আমি সবাইকে সরিয়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে ইউএনও মহোদয় মিটিং স্থগিত করে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান মুঠোফোনে বলেন, আজকে আইন শৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় মিটিং ছিল। মিটিং শুরু হওয়ার আগেই কিছু লোক এসে আওয়ামী লীগের যারা চেয়ারম্যান আছে তাদেরেকে নিয়ে মিটিং করা যাবে না এধরণের পরিস্থিতি তৈরী করে। এসময় অফিসার ইসচার্জ তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরবর্তীতে সভা স্থগিত করা হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন