সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 


 

 

 দিনাজপুরে জামায়াতের নামে পিতা-পুত্রের ‘তুঘলকি কাণ্ড’

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর সদর উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. নাসির উদ্দীন। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘমেয়াদে একই দায়িত্বে থাকায় ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও নিজের মর্জি ও স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। তারই বড় ছেলে মো. আবু বক্কর সিদ্দিককে করেছেন দলটির যুব বিভাগের ইউনিয়ন সভাপতি।

ব্যক্তিগত ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ছেলের জন্য তিনি এ পদ বাগিয়েছেন। যদিও গত ৫ আগস্টের আগে জামায়াতের কোনো কার্যক্রমে আবু বক্করের সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে ‘অভিযুক্তরা জামায়াতের কেউ নন’ বলে মন্তব্য করেছে জামায়াতের জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান।

ইউনিয়ন জামায়াতের একাংশের দাবি, বাবার সুবাদে পাওয়া পদের দাপটে আবু বক্কর এখন ‘সর্বেসর্বা’। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনেই রাতারাতি ‘মাতব্বর’ বনে গেছেন। তৈরি করেছেন তোষামদি গ্রুপ। ইউনিয়নে অবৈধ বালু উত্তোলন, টেন্ডারবাজি, মামলা বাণিজ্যেও রয়েছে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ। এমনকি থানা পর্যায়ের নেতা ও ইউনিয়নের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা বলতেও দ্বিধা করেন না আবু বক্কর।

গত ৫ আগস্টের আগে তিনি শিবিরের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন থানা ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল পর্যায়ের একাধিক নেতা। বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে তার তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরে দেখা যায়, গত ৬ আগস্টের আগে দল সম্পর্কিত কোনো পোস্ট করেননি তিনি। এরপর ধারাবাহিকভাবে দল-সংশ্লিষ্ট পোস্ট করেছেন।

জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে সুন্দরবন ইউনিয়ন আমীরের দায়িত্বে রয়েছেন নাসির উদ্দীন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের পরামর্শ না নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমনকি জাতীয় নির্বাচনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীকে এলাকায় নিয়ে গেলেও জানান না অন্যদের। তার এমন স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ২০২৫ সেশনের জন্য পুনরায় আমীর নির্বাচিত হওয়ায় নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কয়েকজন রুকন (সদস্য)।

ইউনিয়ন জামায়াতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কমিটির কোনো সদস্যের সাথে পরামর্শ না করেই নিজ ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিককে যুব বিভাগের সভাপতি বানিয়েছেন নাসির উদ্দীন। অথচ গত ৫ আগস্টের আগে জামায়াত কিংবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। বাবার বদৌলতে পাওয়া পদে আসীন হয়েই নেমে পড়েন আধিপত্য বিস্তারে। গড়ে তোলেন একাধিক অনুসারী গ্রুপ। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তার খাস অনুসারী নূর ইসলাম। যিনি জামায়াতের কর্মী দাবি করলেও দলটির ঊর্ধ্বতন নেতারা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নূর ইসলাম জামায়াতের কর্মী নয়’।

অনুসন্ধানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি, মামলায় নাম দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবিসহ নানা ‘অপকর্মে’ তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এমনকি তার সহযোগী হিসেবেও কয়েকজনের নাম সামনে এসেছে। সম্প্রতি ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের কমিটিতেও আবু বক্করের হস্তক্ষেপে এবং নাসিরের একক সিদ্ধান্তে নূর ইসলামের অনুগতদেরই ঠাঁই হয়েছে।

এমনকি এক পরিবার থেকেই দুজনকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও রাখা হয়েছে। কমিটির নতুন সভাপতি মুজাহার আলীর বিরুদ্ধে মসজিদে দানকৃত জমি ভোগ-দখলসহ রয়েছে নানা অভিযোগ। তার বড় ছেলে শামীম হোসেনকে ওই কমিটির সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক পদে আসীন করা হয়েছে। যদিও শামীম যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে বিএনপির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

জামায়াতের বিরোধিতায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নির্বাচন করা জালাল উদ্দীনের ছেলে মোয়াজ্জেম পেয়েছেন দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব। দলটিতে তার সক্রিয়তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এবং বায়তুলমাল সম্পাদক গাজিউর রহমান দলটির ‘কর্মী’ নন বলেও ইউনিয়ন জামায়াতের ঊর্ধ্বতন নেতারা দাবি করেছেন। আবার মাহাবুর রহমান নামে একজন ব্যক্তিকেই দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতি এবং সহ-সেক্রেটারির পদ। নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে নূর ইসলাম ও আবু বক্কর সিদ্দিকের রয়েছে যোগসাজশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সুন্দরবন গ্রামের সুদুর ঘাট থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা এড়াতেই নিজেদের মন-মর্জিমত কমিটি দিয়েছেন বাবা-ছেলে। নূর ইসলাম জামায়াতের ব্যানারে এসব অপরাধে জড়িত হওয়ায় একাধিকবার দলটির ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ইউনিয়ন আমীর ‘প্রমাণাদি’ নেই বলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। প্রকাশ্যে যুবলীগের রাজনীতি করা রবিউলকেও তারা প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ।

অভিযোগকারীরা জানান, এই চক্রটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় একাধিক ব্যক্তি মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন আমীর ও ঊর্ধ্বতন নেতাদের বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও তারা সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো প্রমাণাদির কথা তুলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। প্রমাণ উপস্থাপন করতে চাইলেও তারা নানা টালবাহানায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ইতোমধ্যেই থানায় আবু বক্করের সেই তোষামদি গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরও। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদুল ইসলামের ছেলে নূর ইসলাম, সুন্দরবন ইউপির সাবেক সচিব মো. ছাইদুল ইসলামের ছেলে কামরুল হাসান, ওই নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) গোলাপ হোসেনের ছেলে সেলিম হোসেন, আসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, ‘নাসিরের ছেলে সরকারি বরাদ্দের কম্বল বিতরণ, মাতৃকালীন ভাতা, টিসিবি পণ্যের কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনুসারীদেরকেই প্রাধান্য দিয়েছে। এ নিয়ে একজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে উচ্চবাচ্যও করেছেন আবু বক্কর। ইউনিয়ন পরিষদে টেবিল থাপড়িয়ে বিভিন্ন ভাতার কার্ড ছিনিয়েও নিয়েছে। অথচ সে কোনেদিন জামায়াতের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিল না। তার বাবাকে অভিযোগ দিলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি।’

বালু তোলার ছবি ধারণ করায় মারধরের শিকার হন স্থানীয় যুবক মো. রুবেল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নূর ইসলাম, কামরুল অবৈধভাবে বালু তুলছিল। 

ওরা বলছে, বালু তুলে মসজিদ আর মাদ্রাসায় টাকা দিচ্ছি। কিন্তু তারা টাকা দেয় না, উল্টো খায়। আমি ওদের বালু তোলার ছবি তুলেছিলাম। এই কারণে নতুন ভূষিরবন্দর বাজারে আমাকে উলঙ্গ করে মারধর করে তারা। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

ধনিগ্রাম সুন্দরবন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তারা আমার সমিতিতে গিয়ে ঠিকাদারকে তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। কিন্তু ঠিকাদারকে না পাওয়ায় সমিতির চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়। ভূষিরবন্দর বাজারে এ ব্যাপারে তাদের সাথে বাকবিতন্ডাও হয়। কাজ বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। মূলত তাদের উদ্দেশ্যই ছিল চাঁদা নেওয়া।’

স্থানীয় সচেতন মহলের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালুর ট্রলি আটকে দেন মহসীন আলী। কিন্তু তাকে মোবাইল ফোনে নানান হুমকি-ধমকি দেন আবু বক্কর। পরে এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের শরণাপন্ন হলেও তার অভিযোগ নেননি থানা আমীর। উল্টো তার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চান বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মহসীন আলী বলেন, ‘জামায়াতের ইউনিয়ন আমীরের ছত্রছায়ায় তার ছেলের মদদে অবৈধভাবে বালু তুলছেন স্থানীয় এই ছেলেগুলো। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি দেন। জামায়াতের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে তারা অভিযোগ না নিয়ে আমার রাজনৈতিক পরিচয় জিজ্ঞেস করে। এলাকার সবাই জানে আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। সরকারি সম্পদ তারা অবৈধভাবে লুট করায় প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি। তারা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি রাজনৈতিক দলটির কোনো সহযোগিতা পাইনি। আসলে তারা এই চক্রটিকে শেল্টার দিচ্ছে কি না, আমার জানা নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন ও থানা জামায়াতের একাধিক রুকন (সদস্য) জানান, নাসির উদ্দীন তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছেলেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। এ ব্যাপারে কারও সাথে কোনো পরামর্শ করার প্রয়োজন বোধ করেননি। ক্ষমতা পেয়ে তার ছেলে আবু বক্কর বেপরোয়া হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের নিয়েও অযাচিত কথাবার্তা বলে বেরায়। আবু বক্কর সিদ্দিক আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ‘নির্বাচন করবেন’ বলেও গুঞ্জন রয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। ক্ষুব্ধ জামায়াত নেতাকর্মীসহ স্থানীয়রা বাবা-ছেলের বহিষ্কারসহ তাদের সমর্থিত ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বালু উত্তোলনে জড়িত বা ৫ আগস্টের আগে দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না- এগুলো সত্য নয়।’

সুন্দরবন ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর নাসির উদ্দীন বলেন, ‘ও (আবু বক্কর) ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী ছিল। আমার নির্দেশনায় নয়, থানা জামায়াতের পরামর্শে কাজ করা হয়েছে।’ তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনোটাই অস্বীকার করেননি তিনি।

কামরুল হাসান বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভুয়া’। অবৈধভাব বালু তোলার ছবি ধারণ করায় মারধর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি অসত্য। গ্রামের চক্রান্ত।’ তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে নূর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অবৈধভাবে বালু তোলার সাথে গ্রাম পুলিশের সম্পৃক্ততা আছে নিশ্চিত করে সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, “ইউনিয়নে বালু উত্তোলনের কোনো টেন্ডার হয়নি। আমি প্রতিদিন যাচ্ছি। যখন যাচ্ছি তখন বন্ধ আর চলে আসলে আবার তুলে। কয়েকদিন ধরে দিনের পরিবর্তে রাতেও বালু তুলতেছে। এরা স্থানীয় জামায়াতের। আমি চৌকিদারকে বলেছি কিন্তু গোলাপ চৌকিদার বলছে যে, ‘না, না স্যার বালু তোলা হচ্ছে না’। গোলাপ চৌকিদার বালু তোলার সাথে জড়িত, আমি প্রমাণ পেয়েছি। কিন্তু ওকে ধরলে অস্বীকার করে। ট্রলিগুলো ধরতে হবে, মামলা বা জরিমানা না করলে এগুলো বন্ধ হবে না।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, ‘আমরা কয়েক দফা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি। এর আগে থানায় অভিযোগগুলো পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্ত করছে। সরেজমিনে দেখে তারা মামলা করতে পারবে।’ তবে এ বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (দিনাজপুর সদর) শাখা-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু হোরায়রা বাদল জানান, এটি তার দায়িত্বরত এরিয়ার আওতাভুক্ত নয়। ইউএনও অফিস থেকে চিঠি এসে থাকতে পারে।

সুন্দরবন ইউনিয়ন আমীর ও তার ছেলে আবু বক্করের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা তাদের চিনি না। আমাদের কোনো লোকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসলে কোনো খাতির নেই, তাকে বহিষ্কার করে দিব। তবে আমরা যেটা শুনেছি সেটা আমাদের লোক নয়।’

তাপস চন্দ্র রায়,চিরিরবন্দর,দিনাজপুর।
তারিখঃ-২১-০১-২০২৫ ইং
মোবাইল নং -০১৭২২৬৯১৭১০

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন