মোহনপুরের কেশরহাটে নকল সার বিক্রি করায় ৪ কীটনাশক দোকানীকে জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী কেশরহাটে দীর্ঘদিন ধরে নকল দস্তা ও বোরন সার বিক্রির দায়ে ৪ দোকানীকে নগদ ১৯ হাজার টাকা ও নকল নকল দস্তা ও বোরন জব্দ করেছে মোহনপুর উপজেলা প্রশাসন।
৭ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট বাজারে উপজেলা কৃষি অফিস ও থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আয়শা সিদ্দিকা'র ভ্রাম্যমান আদালতে এ জরিমানা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতে সার (ব্যবস্থাপনা) আইন-২০০৬,১৭ এর ২ঘ লঙ্ঘন করায় মেসার্স মুকবুল কীটনাশক এ্যান্ড সীড স্টোরকে নগদ ২ হাজার, মেসার্স আমিনুল কীটনাশক এ্যান্ড সিড স্টোরকে ২ হাজার, মেসার্স তুষার কীটনাশক স্টোরকে ১০ হাজার টাকা ও মেসার্স কৃষি কল্যান দোকানীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ নকল দস্তা ও বোরন সার জব্দ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এম এ মান্নান, এসএপিপিও মোস্তফা কামালসহ মোহনপুর থানা পুলিশের এসআই সিরাজ উদ্দীন সঙ্গীয় ফোর্স।
উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, গত মার্চ মাসে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেশরহাটের কয়েকটি দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের সারের নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা করা হয়। অন্য কোনো সারের নমুনায় ভেজালের তথ্য তেমন পাওয়া না গেলেও তিনটি সারে উঠে আসে ভেজালের বিভিন্ন মাত্রা। যার মধ্যে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে বোরন ও দস্তা। সারের মূল উপাদানে জিংক থাকতে হবে ৩৬% ও সালফার থাকতে হবে ১৭.৫%। অথচ অনেক নমুনায় মেলেনি সারের মূল উপাদান। বাজারে বিপনন করা যে যে পেস্টিসাইড কোম্পানির বোরন ও দস্তায় সারের মূল উপাদান মেলেনি সে কোম্পানিগুলি হল, বিসমিল্লাহ করপরেশণ লিঃ এর ডলার জিংক (মনো) উপাদান পাওয়া গেছে জিংক-১.২% সালফার ১৪.৮%, হারভেস্ট এগ্রোভেট লিঃ এর সতেজ জিংক সালফেট (মনো) জিংক-২৯.১% সালফার ১৩.১%, পারফেক্ট এগ্রো কেয়ার এ্যান্ড ফিসারিজ লিঃ এর বোরন সার (বরিক এসিড) বরিক শূন্য এসিড ০.২℅, রের্স এগ্রো কেয়ার এর রেস জিংক (মনো) জিংক-১.৪% সালফার ১৩%, সারফ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এর শক্তি প্লাস জিংক সালফেট (মনো) জিংক-০% সালফার ২.৩%, আরপি এগ্রো কেমিক্যালস এর আরপি জিংক জিংক সালফেট (মনো) জিংক-১১.৫% সালফার ১২.৬%, পাওয়ার এগ্রো কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ এর পাওয়ার জিংক, জিংক সালফেট (মনো) জিংক-১.৪% সালফার ১৩.৯%, কনফিডেন্স এগ্রিকেয়ার এক্সপোট এন্ড ইমপোট লিং এর কৃষি জিংক, জিংক সালফেট (মনো) জিংক-২৭.২% সালফার ১২.০%, পাওয়া গেছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো এই সারগুলো আমদানি করছে কিংবা দেশে প্যাকেজিং করে বিপণন করছে তারাই এ জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। দাম বেশি হওয়ায় নিম্নমানের পণ্য প্যাকেটজাত করে কৃষকের সঙ্গে এই প্রতারণা করছে তারা।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা জানান, পুরো উপজেলায় উক্ত কোম্পানি গুলির দস্তা ও বোরন বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভেজাল সার ও কীটনাশকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। যে সকল কোম্পানির নকল দস্তা ও বোরন পাওয়া গেছে সেই সকল কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন