আদালতে হার, তবু থেমে নেই দখলচেষ্টা সাগান্না বাঁওড়ের ১০০ বিঘা জমি দখলে মরিয়া প্রভাবশালীরা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান
ভেকু মেশিনে সমান করা হচ্ছে বাঁওড়ের মাটি, ক্ষুব্ধ স্থানীয় মৎস্যজীবীরা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না বাঁওড়কে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। সরকারি মালিকানাধীন প্রায় ১০০ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করছে একটি প্রভাবশালী মহল। আদালতে মালিকানা দাবি খারিজ হওয়ার পরও তারা ভেকু মেশিন চালিয়ে বাঁওড়ের মাটি সমান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাঁওড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য লাল্টু মণ্ডল জানান, পুরো বাঁওড়টির আয়তন প্রায় ১২৬.৪৫ একর। এর মধ্যে ২০০০ সালে বেড়াদী গ্রামের ৭৯ জন ব্যক্তি ২৯.৯০ একর জমি নিজেদের দাবি করে আদালতে মামলা করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর জেলা যুগ্ম জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মুহাম্মাদ জাকারিয়া মামলাটি খারিজ করে দিয়ে সরকারের স্বত্ব বহাল রাখেন।
তবে আদালতের রায় সত্ত্বেও বেড়াদী গ্রামের হবিবার রহমান, মুনছুর আলী মাস্টার, খোকন, আকবর আলী, ঠাণ্ডু মিয়া ও বিশারত আলী মিলে বাঁওড়ের জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। তারা ভেকু মেশিন দিয়ে বাঁওড়ের পাড় কেটে মাটি ফেলে জমি সমান করছেন। এতে বাঁওড়ের নাব্যতা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাঁওড়ের একজন জেলে আলমাস হোসেন বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে বারবার মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। কখনোই তারা মামলা জেতেনি, তবুও এখন জোর করে জমি দখল করার চেষ্টা করছে।”
এই বিষয়ে হবিবার রহমান বলেন, “আমাদের নামে ৬২ ও ২৬ সনের রেকর্ড আছে। কিন্তু আমাদের ঠকিয়ে রেকর্ড বাতিল করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছি।”
সোমবার দুপুরে বাঁওড় এলাকার শতাধিক মৎস্যজীবী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
ঝিনাইদহ সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, “সরকারি জমি কেউ দখল করতে পারবে না। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা লিটন হোসেনকে পাঠানো হয়েছে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন